Posts

Showing posts from October, 2024

উত্তেজনা এবং তার শিকার

    আমার প্রিয় ছাদের ঘরটার সাথে আমাদের বাকি ঘরগুলোর কোনো সরাসরি যোগাযোগ নেই। একবার ওই ঘরে আসুন বুঝবেন বাইরের দুনিয়ার থেকে আপনি বেশকিছুটা দূরে এসে গিয়েছেন। এই ঘরটার একপাশে একটা খাটাল বেশ বেশকিছুটা জায়গা নিয়ে ওখানে থাকে অনেককটা মোষ আর দুটো গরু। মোষগুলো থাকে টিনের চলার নিচে আর গরুগুলো আর একটু আরামে খড়ের চলার বানানো সুন্দর গোয়ালঘরে। গরুগুলো দিনের বেলায় চরতে বের করলেও মোষগুলো সারাদিন আর রাত বন্দি থাকতো ওখানেই। ওরা লক্ষ্য করবেন খুব বেশি কমপ্লেন করেনা, গরুগুলো তবুও "হাম্বা হাম্বা" বলে প্রতীকী প্রতিবাদ করলেও কালো কালো মোষগুলো শুধু খড় আর ভুষি তেই তুষিয়ে যেত, ওরা স্পিকটিনট । আমাদের ঘরের অন্য দিকে আছে নীলিমা ঠাকুমাদের বাড়ি।ওদের বাড়ির ছাদটা আমাদের চেয়ে একটু বেশি উঁচু, ছাদ থাকলে যা হয় আরকি ওখানে ভেজা জামা, মোজা, গেঞ্জি শুকোনোর জন্যে প্রায় দেয়া হতো আর মাঝে মাঝে শাড়ি। এই হলো গল্পটার দিনের পরিবেশ । সামনে মাধ্যমিক রাতজেগে পড়াশুনো চলছে, একাকিত্ব আর নির্জনতার সন্ধানে আমি ছাদের ঘরে নিজেকে চালান করেছি একমাস হলো, আমি আজকে রাতে আর পড়তে পারছিনা ইতিহাস আমার একদম ভালো লাগেনা, ওটাকে রাত্রের জন্যে রেখে ...

মনের মোকদ্দমা

  "আচ্ছা এখানেই তো সেই বিশ্ববিখ্যত পরিত্যক্ত ভুতুড়ে রেলস্টেশন না?"। যেইনা ভাবা অমনি মনের মধ্যে একটা মোকদ্দমা শুরু হয়ে গেল। বেশ জটিল মামলা কোর্টরুম ঠাসাঠাসি, বেজায় চেঁচামেচি, জনতা ফিস্ ফিস্ করে বলে " সাহস দেখছো ছোকরার, কোথায় যাওয়ার কথা ভাবছে?"।কিছুদুরে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আসামি পিটপিট চোখে তাকায় ( অনেকটা আমার মতন দেখতে ), কালো কোর্ট পরা সরকারি পক্ষের উকিল ( এটাও দেখছি আমারি মতন সুদর্শন) কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে। আসামি পক্ষের উকিল (এটাও আমি) এখনো বিড়ম্বনার মধ্যে মামলা কোন দিকে যায়, "যেদিকেই যাক তাতে তার কি?" এটা কি আসল মোকদ্দমা নাকি? এটা মনের মধ্যে দ্বন্দ্বের মোকদ্দমা। উঁচু চেয়ার খানি চেপে নাক উঁচু চশমা নিচু জজ সাহেব (ওরে বাবা এটাও আমি) গম্ভীর গলায় বলে " অর্ডার! অর্ডার!" । পুরো কোর্টরুম নিস্তব্ধ নিমেষে। সরকারি উকিল পরোক্ষনে গর্জে উঠলো " হুজুর দেখুন কাঠগড়ায় দাঁড়ানো এই আসামিকে, বিগত ৩০ বছরে সাহসের কাজ একটাও করেনি, আজকে কি করে ভাবে যে সেই পরিত্যক্ত স্টেশনে যাবে? সমস্ত সাক্ষ প্রমান বলে দিনের আলোতেও লোকজন যেতে সাহসে কুলায় না সেখানে! আরো লক্ষ্য করুন...

সমালোচক

  এক লাইন লিখেছি কি লিখিনি! অমনি কোথা থেকে উড়ে আসে, মাথা নাড়িয়ে "উঁহু,উঁহু, হচ্ছে না" বলে সব ঘেঁটে দিয়ে চলে যায়। একে আমার লেখা পড়ার লোক কম, তায় যদি কেউ রায় দেয় তবে তাকে সম্মান দিতেই হয়। এর পরে নৈতিক বাধ্যবাধকতাজনিত কারণে আমাকেও সব কেটে কুটে ফেলে দিতে হয়। শেষ কটা দিন ধরে সেটাই হচ্ছে, রোজ একই লোক, একই সমস্যা। সেই কবে একবার বেগুনকোদর যাওয়ার সময় একবার রায় নিয়েছিলাম, তার পর থেকে "গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল"। আমি কিন্তু বেজায় রেগে গিয়েছি এবারে, এদের বেশি মাথায় চাপাতে নেই সত্যি বলছি। এই লোকটাকে আমি কোনদিন "বাক স্বাধীনতা এবং অভিব্যক্তি" রোধের আইনে জেলে ছুঁড়ে দেব। কিন্তু আদালত আর জজ সাহেবকে বোঝানো খুব ঝক্কি হবে। সকাল সকাল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখে রেগে এসব ভাবছিলাম। সামনে থেকে আবার - "উঁহু,উঁহু, হচ্ছে না"। ধুর ছাই।